Tumgik
siraat-al-mustaqeem · 4 years
Text
যিনা কি? যিনার ভয়াবহতা ও শাস্তি।
Tumblr media
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা:) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
রাসুল (সা:) ইরশাদ করেন, "চোখের জিনা হলো হারাম দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হলো ‘গায়রে মাহরামের (বেগানা নারী-পুরুষ) যৌন উদ্দীপক’ কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শোনা। জিহ্বার জিনা হলো, ‘গায়রে মাহরামের সঙ্গে সুড়সুড়িমূলক’ কথোপকথন। হাতের জিনা হলো, ‘গায়রে মাহরামকে’ ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হলো, ‘খারাপ উদ্দেশ্যে’ চলা। অন্তর চায় ও কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় ‘যদি জিনা করে’ এবং মিথ্যা পরিণত করে ‘যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে "। ( সহিহ বুখারী, মিশকাত : ৮৬,মুসলিম : ২৬৫৭ )
যিনা হারামঃ আল্লাহ তাআ’লা যিনাকে হারাম ঘোষণা করে বলেনঃ “তোমরা যিনার কাছেও যাবে না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ”। (বনী-ইসরাঈলঃ ৩২)
যিনা বা ব্যভিচার বলতে বুঝায় ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধন ছাড়া অবৈধ পন্থায় যৌন তৃপ্তি লাভ করাকে। ইসলামী শরীয়াতে অবৈধ পন্থায় যৌন সম্ভোগ সম্পূর্ণ হারাম এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ইসলামের মূল লক্ষ্যসমুহের মধ্যে অন্যতম লক্ষ্য হল, মানুষের ইজ্জত-আবরু ও বংশের হেফাজত করা। যিনার মাধ্যমে ইসলামের এ মহান উদ্দেশ্য বিঘ্নিত হয় বিধায় ইসলামে এটি হারাম বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং যে সব মানবিক অপরাধের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে এটি তন্মধ্যে গুরুতর ও অন্যতম। ব্যভিচার একটি মহাপাপ যা অনেকগুলো অপরাধের নায়ক। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন: “কোন রকম অশ্লীলতার কাছেও যেও না তা প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে হোক।” (আল আন-আম: ১৫১)
অশ্লীল কাজসমূহের মধ্যে যিনা বা ব্যভিচার সর্বাধিক অশ্লীল কাজ। ইসলাম পর্দার বিধান পালন, দৃষ্টি অবনতকরণ ও পরনারীর সাথে নির্জনে অবস্থান নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে ব্যভিচারের পথ ও মাধ্যম রুদ্ধ করে দিয়েছে।
কোরআন শরিফ থেকে যিনার শাস্তিঃ
কুরআনে সর্বপ্রথম সূরা নিসায় জিনার শাস্তি সম্পর্কিত সাময়িক অস্থায়ী নির্দেশনা অবতীর্ণ করা হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন,
"আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোন পথ নির্দেশ না করেন। তোমাদের মধ্য থেকে যে দু’জন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু"। ( সূরা নিসা : ১৫-১৬ )
কিন্তু পরবর্তীতে সূরা নূরে নবায়িত নির্দেশনা অবতীর্ণ হওয়ার পর পূর্বোক্ত আয়াতের নির্দেশনা রহিত হয়ে যায়। এছাড়াও, অধিকাংশ নিয়মকানুন যেগুলো জিনা (ব্যভিচার/পরকীয়া), স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর উপর বা সমাজের সদস্যগণ কর্তৃক সতী সাধ্বী নারীর উপর আরোপিত অভিযোগ সম্পর্কিত, সেগুলো সূরা নূর (আলো) এ পাওয়া যায়। এই সূরাটি শুরু হয়েছে জিনার শাস্তি সম্পর্কিত বেশ কিছু বিশেষ নির্দিষ্ট নিয়মকানুন প্রদানের মধ্য দিয়ে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছন :
"ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত করো। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থকো। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ কর"। ( আন-নূর : ২ )
"ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে"। ( আন-নূর : ৩ )
"যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই না’ফারমান।কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান"। ( আন-নূর : ৪,৫ )
"মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে।নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে"।…( আন-নূর : ৩০,৩১)
হাদিসের আলোকে যিনার শাস্তি:
ঈমান চলে যায়: আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘যিনাকারী যিনা করার সময় মু’মিন থাকে না। চোর চু্রি করার সময় মু’মিন থাকে না। মদপানকারী মদ পানের সময় মু’মিন থাকে না। তবে তারপরও তাওবাহ উন্মুক্ত।’ ( সহিহ বুখারী : ৬৮১০ )
রাসুল (সা:) আরো বলেন, “কোন ব্যক্তি যখন ব্যভিচার করে তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেরিয়ে যায়, এরপর তা তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করতে থাকে। এরপর সে যখন তা থেকে তওবা করে তখন তার ঈমান পুনরায় তার কাছে ফিরে আসে”। ( আবু দাউদ : ৪৬৯০, সুনানে তিরমিজি : ২৬২৫)
অবিবাহিত যুবক, যুবতী উভয়কে বেত্রাঘাত করা হবে এবং নির্বাসিত করা হবে।
যায়দ ইব্‌নু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে আদেশ দিতে শুনেছি ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে একশ’ বেত্রাঘাত করার ও এক বছরের জন্য নির্বাসনের, যে অবিবাহিত অবস্থায় যিনা করেছে। (সহিহ বুখারী : ৬৮৩১)
যিনাকারী বিবাহিত হলে তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার নির্দেশ : ৪৩০৬-(১২/১৬৯০) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামিমী (রহঃ) ...... উবাদাহ্ ইবনু সামিত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর, তোমরা আমার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা মহিলাদের জন্য একটি পন্থা বের করেছেন। যদি কোন অবিবাহিত পুরুষ কোন কুমারী মেয়ের সাথে ব্যভিচার করে তবে একশ' বেত্ৰাঘাত কর এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন দাও। আর যদি বিবাহিত ব্যক্তি কোন বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে ব্যভিচার করে, তবে তাদেরকে প্রথমত একশ' বেত্ৰাঘাত করবে, এরপর পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করবে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২৬৭, ইসলামিক সেন্টার ৪২৬৭)
বিবাহিত ও নিজ অপরাধ স্বীকারকারীর শাস্তি :
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এল। তখন তিনি মাসজিদে ছিলেন। এসে তাঁকে ডাক দিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল। আমি যিনা করেছি, সে নিজেকেই উদ্দেশ্য করল। তখন তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কিন্তু সে ঐদিকেই ফিরে দাঁড়াল, যে দিকটি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে সম্মুখ করলেন এবং বলল হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি যিনা করেছি। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন, আর সে এদিকেই এল যে দিকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। লোকটি তখন নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য দিল তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডাকলেন। এরপর জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মধ্যে পাগলামি আছে কি? সে বলল, না, হে আল্লাহ্‌র রসূল। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি কি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল। তিনি বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও এবং পাথর মেরে হত্যা কর। ( সহিহ বুখারী : ৬৮২৫ )
বৃদ্ধ যিনাকারীর শাস্তি:
বাধ্যর্কে উপনীত কোন ব্যক্তি যদি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তবে তার শাস্তি আরো কঠোর ও নির্মম হবে। আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘আল্লাহ তিন ধরণের মানুষের সাথে কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের প্রতি তাকাবেনও না। আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি; তারা হল, বৃদ্ধ যিনাকারী, মিথ্যাবাদী বাদশাহ ও অহংকারী ফকীর।’(মুসলিম: ১৮৫২)
বেগানা নারী-পুরুষের নির্জন সাক্ষাত:
বেগানা নারী-পুরুষের মাঝে নির্জনবাসকে ইসলাম হারাম করেছে। হাদিসে এসেছে- উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো পুরুষ অপর (মাহরাম তথা বিবাহ বৈধ এমন) নারীর সাথে নিঃসঙ্গে দেখা হলেই শায়ত্বন সেখানে তৃতীয় জন হিসেবে উপস্থিত হয়। (সহীহ : তিরমিযী : ২১৬৫)
সুতরাং প্রেম-ভালবাসার নামে যুবক-যুবতীদের মাঝে যা কিছু ঘটছে শরিয়তের ভাষায় সেগুলোও ব্যভিচারের পর্যায়ভুক্ত; জঘন্য গুনাহর কাজ।
পরকালে ভয়াবহ শাস্তি:
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।’ (আন-নূর : ১৯)
(১৬৫২) সামুরাহ ইবনে জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক স্বপ্নের বর্ণনায় বলেন, '-সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং (তন্দুর) চুলার মত একটি গর্তের কাছে পৌঁছলাম। সেখানে শোরগোল ও নানা শব্দ ছিল। আমরা তাতে উঁকি মেরে দেখলাম, তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী-পুরুষ রয়েছে। আর নীচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে, তখনই তারা উচ্চরবে চিৎকার করে উঠছে। আমি বললাম, ‘এরা কারা?’ ফিরিশতারা আমাকে বললেন, ‘চলুন, চলুন।’ অতঃপর তাঁরা বললেন, ‘যে সকল উলঙ্গ নারী-পুরুষ যারা (তন্দুর) চুলা সদৃশ গর্তের অভ্যন্তরে রয়েছে, তারা হলো ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণীর দল।’ (সহিহ : বুখারী ১৩৮৬)
ব্যভিচারিণীর উপার্জন:
সবচেয়ে নিকৃষ্ট উপার্জন হল- ব্যভিচারিণীর ঐ উপার্জন যা সে ব্যভিচারের মাধ্যমে অর্থাৎ দেহ ব্যবসার মাধ্যমে অর্জন করেছে। এ সম্পর্কে রাফে বিন খাদিজ (রা:) হাদীস বর্ণনা করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “কুকুর বিক্রিত পয়সা নিকৃষ্ট এবং যিনাকারিণীর উপার্জনও নিকৃষ্ট, সিঙ্গা লাগানোর মাধ্যমে উপার্জনও নিকৃষ্ট।” (সহিহ: মুসলিম: ১৫৬৮)
লজ্জাস্থানের হেফাজতকারীর জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা:
আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন : “আর তারা নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহকে সংযত রাখে, তাদের স্ত্রী ও তারা যাদের মালিক হয়েছে তাদের ক্ষেত্র��� ছাড়া এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। সুতরাং কেউ এ ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমা লংঘণকারী। এবং যারা আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী; আর যারা নিজেদের নামাযে যত্নবান থাকে। তারাই হবে উত্তরাধিকারী; উত্তরাধিকারী হবে ফেরদাউসের, যাতে তারা স্থায়ী হবে।” (সূরা আল-মু'মিনূন: ৫'মিনূন)
৩/১৫২১। সাহাল ইবনে সায়াদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী (অঙ্গ জিভ) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী (অঙ্গ গুপ্তা-ঙ্গ) সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব"। ( সহীহ : বুখারী ৬৪৭৪, ৬৮০৭, তিরমিযী ২৪০৮, আহমাদ ২২৩১৬ )
তবে যেনাকারী নারী বা পুরুষ খালেস তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন ও তার গুনাহগুলোকে নেকীতে পরিবর্তন করে দেন। সূরা ফুরকানে আল্লাহ তাআলা যেনাসহ আরও কয়েকটি কবিরা গুনাহ���র শাস্তি উল্লেখ করার পর বলেন:
“তবে যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু”। ( সূরা আল-ফুরকান : ৭০)
সুতরাং ব্যভিচারমুক্ত সমাজ গড়তে আল্লাহর ভয় ও তাঁর বিধিবিধান পালন অত্যাবশ্যক। আল্লাহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে জিনা বা ব্যভিচার থেকে হিফাজত করুন। আমিন।
0 notes
siraat-al-mustaqeem · 4 years
Text
ইসলামে মিথ্যা বলার পরিণাম,শাস্তি!
Tumblr media
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মিথ্যা তো তারাই বানায় যারা আল্লাহর নিদর্শন সমূহের ওপর ঈমান রাখে না। বস্তুত তারাই মিথ্যুক।’  (সূরা নাহাল ১৬:১০৫)।
মিথ্যা একটি চারিত্রিক ব্যাধি। যার মধ্যে মনুষ্য রুচিবোধ কিংবা সুস্থ প্রকৃতি বিদ্যমান সে কোনক্রমেই এর প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করতে পারে না। আর না করাই হচ্ছে স্বাভাবিক মনুষ্য ধর্ম। সকল ধর্মেই এর প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
মিথ্যা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : মিথ্যাবাদীদের উপর অভিসম্পাত। (আল ইমরান :৬১) তিনি আরও বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারী, মিথ্যাবাদীকে পথপ্রদর্শন করেন না। (মু'মিন : ২৮)।
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মিথ্যাবাদীর ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। একটি মিথ্যাকে সত্য বলে প্রমাণ করার জন্য নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় গ্রহণ করা হয়। তারপরও মিথ্যা মিথ্যাই থেকে যায়। মিথ্যাকে সত্য ও সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যায় না। মিথ্যাচার করাই যাদের অভ্যাস তারা সংসারে, সমাজে এবং দেশে নানা সমস্যা ও অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে ইমানদাররা! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সহযোগী হও।’ (আত-তাওবাহ্ : ১১৯)।
মিথ্যাবাদীর কবলে পড়ে প্রায়ই সমাজের নিরীহ মানুষ প্রতারিত হয়ে থাকেন। মিত্যাবাদীর ওপর আল্লাহ্পাকের অভিশাপ বর্ষিত হয়। মিথ্যাবাদী ক্রমশ মানসিক শক্তি ও সৎসাহস হারিয়ে ফেলে। তখন তার হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। স্বীয় স্বার্থে যে কোনো কাজ করতে সে দ্বিধা করে না। যে মিথ্যাকে ত্যাগ করতে পারে সে কোনো প্রকার অন্যায় কাজ করতে পারে না। সকল পাপের মূল হচ্ছে মিথ্যা বলা।
তাই মিথ্যাবাদীকে আল্লাহ প্রচণ্ড ঘৃণা করেন। আল কোরআন ও হাদিসে মিথ্যুক এবং মিথ্যাবাদীর ভয়ানক পরিণতির কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই তার অনুসরণ কর না।’ (বনি-ইসরাঈল : ৩৬)।
আল্লাহ আল কোরআনে হুশিয়ার করে বলেন,'সুতরাং পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে নিফাক (দ্বিমুখিতা) রেখে দিলেন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তারা আল্লাহকে যে ওয়াদা দিয়েছে তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল তার কারনে'। (আত-তাওবাহ্ : ৭৭)।
মিথ্যা ইসলামের দৃষ্টিতে অতি গর্হিত, অবশ্য-বর্জনীয়। মিথ্যাবাদিতা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মিথ্যাবাদীর শাস্তির কথা উল্লেখ করে ইরশাদ করেছেন, ‘তাদের হৃদয়ে আছে একটি রোগ, আল্লাহ সে রোগ আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর যে মিথ্যা তারা বলে তার বিনিময়ে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ ওদের যখন বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে অনাচার করো না, তারা বলে, আমরা তো শান্তি স্থাপনকারী। জেনে রাখো, ওরাই অনাচার বিস্তারকারী, কিন্তু ওদের চেতনা নেই’। (সুরা বাকারা : ১০-১২)।
আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়।
১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে;
২. কথা বললে মিথ্যা বলে;
৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং
৪. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগালি করে।(সহিহ বুখারী ৩৩)
বিচার দিবসে আল্লাহ্পাক মিথ্যা বলে বেচা-কেনাকারীর সাথে কথা বলবেন না।হাসি-তামশা, কিংবা স্বাভাবিক অবস্থা-মিথ্যা সর্বাবস্থায় নিষেধ, শিশুদের সাথে রসিকতা কিংবা খেলাধুলাতেও মিথ্যা থেকে বিরত থাকার কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।কারণ এটা বাচ্চাদের অন্তর গেঁথে যায় এবং তাদের কে মিথ্যা বলতে উৎসাহ জোগায়।
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা অবশ্যই সত্যের পথ অবলম্বন করবে। কেননা, সততাই মানুষকে কল্যাণের পথে নিয়ে যায়। আর কল্যাণ জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। কোন মানুষ প্রতিনিয়ত সত্য কথা বলতে থাকলে এবং সত্যের প্রতি মনোযোগী থাকলে শেষ পর্যন্ত সে আল্লাহ্‌ তা‘আলার দরবারে পরম সত্যবাদী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়। তোমরা মিথ্যাকে অবশ্যই পরিহার করবে। কেননা, মিথ্যা (মানুষকে) পাপের পথ দেখায়, আর পাপ জাহান্নামের পথে নিয়ে যায়। কোন বান্দাহ প্রতিনিয়ত মিথ্যা বলতে থাকলে এবং মিথ্যার প্রতি ঝুঁকে থাকলে শেষ পর্যন্ত সে আল্লাহ্‌ তা‘আলার দরবারে চরম মিথ্যাবাদী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়। (সহীহ,বুখারী, মুসলিম, তিরমিজি : ১৯৭১)
যাচাই-বাছাই ছাড়া সংবাদ প্রচার করা মিথ্যার শামিল : আবু হুরাইয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা কিছু শোনে [বিনা বিচারে] তা-ই বর্ণনা করে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)।
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ : মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মিথ্যা কথা থেকে দূরে থাকো।' (সূরা হজ, আয়াত ৩০)।
তিনি আরও বলেন, [তারাই পরম দয়াময়ের বান্দা] যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না। (আল ফুরকান : ৭২)
আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমাদের কি অতি মহাপাপের কথা বলে দেব না?’ আমরা বললাম, ‘অবশ্যই বলুন হে আল্লাহর রসুল।’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করা এবং মাতা-পিতার অবাধ্য আচরণ করা।’ তারপর তিনি হেলান ছেড়ে উঠে বসলেন এবং বললেন, ‘শোনো! আর মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।’ শেষোক্ত কথাটি তিনি বার বার বলতে থাকলেন। এমনকি অনুরূপ বলাতে আমরা [মনে মনে] বললাম, ‘যদি তিনি চুপ হতেন।’ (বুখারি, মুসলিম)।
জবানের হেফাজত করুন : আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করুক না কেন তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তত্পর প্রহরী (ফেরেশতা) তার কাছেই রয়েছে।’ (ক্বাফ : ১৮)।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী (জিহ্বা) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী (লজ্জা) স্থানের জামানত দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জামিন হব। (বুখারি)।
রসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা কি জানো গীবত কী?’ সাহাবিরা বললেন, ‘আল্লাহ ও রসুলই অধিক অবগত।’ তিনি বললেন, ‘তোমার ভাইয়ের অসাক্ষাতে এমন কিছু বলা, যা সে অপছন্দ করে।’ আরজ হলো, ‘আমার ভাইয়ের মধ্যে যদি সেই দোষ থাকে যা আমি বলি?’ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি যা বর্ণনা কর তা যদি সত্যিই তার মধ্যে থাকে, তবে এটাই গিবত। আর তার মধ্যে যদি সেই দোষ না থাকে তাহলে তো তুমি তাকে অপবাদ দিলে।’ (মুসলিম)।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার কোনো মুসলমান ভাইকে তার তওবাকৃত অপবাদের কথা উল্লেখ করে লজ্জা দেবে, সে নিজে সেই পাপ না করা পর্যন্ত মরবে না। (তিরমিজি)। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি চুপ থাকে সে নাজাত পায়।’ (তিরমিজি)।
যেসব কারণে মিথ্যা বলা যায় : তিন জায়গায় মিথ্যা বলা বৈধ।
১. যুদ্ধে মিথ্যা বলা বৈধ।
২. দু’গ্রুপের মাঝে সমঝোতা করার জন্য মিথ্যা বলা বৈধ।
৩. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মিল-মহব্বত সৃষ্টি করার জন্যও মিথ্যা বলা বৈধ।
স্বামী স্ত্রী একে অন্যকে খুশি করার জন্য ছোট মিথ্যা বলতে পারে। যেমন, রান্না ভাল না হলেও স্বামী বলল খুব ভাল রান্না হইছে। এরূপ গৃহস্থালী জিনিস।
‘তাওরিয়াহ’ হল এমন বাক্য ব্যবহার করা, যার অর্থ ও উদ্দেশ্য শুদ্ধ তথা তাতে সে মিথ্যাবাদী নয়; যদিও বাহ্যিক শব্দার্থে এবং সম্বোধিত ব্যক্তির বুঝ মতে সে মিথ্যাবাদী হয়। পক্ষান্তরে যদি উক্ত পরিস্থিতিতে ‘তাওরিয়াহ’ পরিহার করে প্রকাশ্যভাবে মিথ্যা বলা হয়, তবুও তা হারাম নয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে মিথ্যা বলার বৈধতার প্রমাণে উলামায়ে কিরাম উম্মে কুলসুম কর্তৃক বর্ণিত হাদিসটি পেশ করেন।
উম্মেকুলসুম (রা:) বলেন, আমি রাসূল (সা:)-কে বলতে শুনেছি : ‘যে ব্যক্তি দু’জনে মাঝে সমঝোতা করার জন্য ভালো কথার আদান-প্রদানকালে মিথ্যা বলে সে মিথ্যুক নয়।’ (বুখারি : ২৫৪৬, মুসলিম : ২৬০৫)
যদি কারো নিকট অপরের আমানত থাকে, আর কোন জালেম যদি তা বলপূর্বক ছিনিয়ে নিতে চায়, তাহলে তা গোপন করার জন্য মিথ্যা বলা ওয়াজেব। অবশ্য এ সমস্ত বিষয়ে সরাসরি স্পষ্টাক্ষরে মিথ্যা না বলে ‘তাওরিয়াহ’ করার পদ্ধতি অবলম্বন করাই উত্তম।
আসুন আমরা কথা-বার্তায়, চাল-চলনে অর্থাৎ জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মিথ্যা পরিহার করে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সচেষ্ট হই।
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন আমাদের সকল অবস্থায় মিথ্যা পরিহার করার তাওফিক দিন; আমিন।
0 notes
siraat-al-mustaqeem · 4 years
Photo
Tumblr media
0 notes
siraat-al-mustaqeem · 4 years
Text
আল্লাহর উপদেশঃ দরবেশ ও আলেমদের প্রতি !!!
'আর আপনি তাদের অনেককে দেখবেন যে, দৌড়ে দৌড়ে পাপে, সীমালঙ্ঘনে এবং হারাম ভক্ষনে পতিত হয়। তারা অত্যন্ত মন্দ কাজ করছে।'
'দরবেশ ও আলেমরা কেন তাদেরকে পাপ কথা বলতে এবং হারাম ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? তারা খুবই মন্দ কাজ করছে'। (সূরা আল মায়েদাহ ৫ঃ৬২,৬৩)
'বলে দিনঃ অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের প্রাচুর্য তোমাকে বিস্মিত করে। অতএব, হে বুদ্ধিমানগণ, আল্লাহকে ভয় কর-যাতে তোমরা মুক্তি পাও'। (সূরা আল মায়েদাহ ৫ঃ১০০)
0 notes